পরিবেশবান্ধব জীবনযাপন: বাংলাদেশে টেকসই ও ইকো-ফ্রেন্ডলি লাইফস্টাইল গড়ার পূর্ণাঙ্গ গাইড
কেন আমাদের এখনই সচেতন হতে হবে?
Reduce (কমানো): অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা ও ভোগ কমানো। Reuse (পুনরায় ব্যবহার): একবার ব্যবহার করে ফেলে না দিয়ে বারবার ব্যবহার করা। Recycle (পুনরায় প্রক্রিয়াজাতকরণ): পুরনো জিনিসকে নতুন রূপে ব্যবহার করা।
বিদ্যুৎ সাশ্রয় ও প্রাকৃতিক আলো: দিনের বেলা ঘরের পর্দা সরিয়ে দিন। অহেতুক লাইট-ফ্যান জ্বালিয়ে রাখবেন না। সাধারণ বাল্বের বদলে LED লাইট ব্যবহার করুন, এতে বিদ্যুৎ বিলও কমে এবং কার্বন নিঃসরণও কমে। এসি চালানোর সময় তাপমাত্রা ২৬ ডিগ্রিতে রাখুন, এতে কম্প্রেসরের ওপর চাপ কম পড়ে। পানির অপচয় রোধ: ওজু করার সময়, শেভ করার সময় বা থালাবাসন ধোয়ার সময় পানির কল ছেড়ে রাখবেন না। বালতি ব্যবহার করার অভ্যাস করুন। বাংলাদেশে সুপেয় পানির সংকট বাড়ছে, তাই প্রতি ফোঁটা পানি মূল্যবান। রাসায়নিক বর্জন: ফ্লোর ক্লিনার বা বাথরুম ক্লিনারে প্রচুর ক্ষতিকর কেমিক্যাল থাকে যা শেষ পর্যন্ত আমাদের নদীনালায় গিয়ে পড়ে। সম্ভব হলে ভিনেগার ও বেকিং সোডা দিয়ে ঘরোয়া ক্লিনার বানিয়ে নিন। এটি স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিবেশবান্ধব।
বাজারের ব্যাগ: বাজারে যাওয়ার সময় সাথে করে চটের বা কাপড়ের ব্যাগ নিয়ে যান। মাছ-মাংস কেনার জন্য আলাদা বাটি বা কন্টেইনার নিতে পারেন। দোকানি পলিথিন দিতে চাইলেও "না" বলুন। পানির বোতল: বাইরে বের হলে সাথে একটি রিইউজেবল (Reusable) পানির বোতল রাখুন। বারবার প্লাস্টিকের বোতলে পানি কিনে খাওয়া পরিবেশ ও স্বাস্থ্য উভয়ের জন্যই খারাপ। বাঁশ ও কাঠের ব্যবহার: প্লাস্টিকের টুথব্রাশের বদলে বাঁশের টুথব্রাশ ব্যবহার করুন। প্লাস্টিকের চিরুনির বদলে কাঠের চিরুনি বা নিম কাঠের চিরুনি চুলের জন্য ভালো।
দেশি ও মৌসুমি খাবার: সুপারশপের ফ্রোজেন বা ইম্পোর্টেড ফলের বদলে স্থানীয় বাজার থেকে টাটকা শাক-সবজি কিনুন। যে খাবারে ফুড মাইল (Food Mile) কম, অর্থাৎ যা আপনার কাছে পৌঁছাতে কম দূরত্ব অতিক্রম করেছে, তা পরিবেশের জন্য ভালো। অপচয় কমানো: খাবার নষ্ট করা পাপ এবং পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। পচা বা উচ্ছিষ্ট খাবার ময়লার ঝুড়িতে না ফেলে তা দিয়ে কম্পোস্ট সার (Compost Fertilizer) তৈরি করতে পারেন। বারান্দার বা ছাদ বাগানের গাছের জন্য এটি সেরা খাবার। মাটির ও কাঁচের পাত্র: প্লাস্টিকের বয়ামের বদলে কাঁচের বয়াম ব্যবহার করুন। রান্না ও খাবার পরিবেশনে মাটির পাত্র ব্যবহার করা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
কাপড় কেনায় সচেতনতা: প্রতি ঈদে ডজন ডজন জামা না কিনে, ভালো মানের অল্প কাপড় কিনুন যা দীর্ঘদিন টিকবে। সুতি, খাদি বা পাটের তৈরি পোশাক বেছে নিন। সিনথেটিক কাপড় ধোয়ার সময় মাইক্রোপ্লাস্টিক পানিতে মেশে। পুরনো কাপড়: পুরনো কাপড় ফেলে না দিয়ে কাঁথা সেলাই করুন অথবা ঘর মোছার কাজে লাগান। দর্জি দিয়ে মেরামত করে পুনরায় ব্যবহার করার সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনুন।
ভুল ধারণা: পরিবেশবান্ধব পণ্য অনেক দামী। বাস্তবতা: শুরুতে বাঁশের ব্রাশ বা স্টিলের বোতলের দাম বেশি মনে হলেও, এগুলো দীর্ঘদিন টেকে। ফলে দীর্ঘমেয়াদে আপনার টাকাই বাঁচে।
ভুল ধারণা: একা করলে কিছু হয় না। বাস্তবতা: বিন্দু বিন্দু জলেই সিন্ধু হয়। আপনার দেখাদেখি আপনার পরিবার ও বন্ধুরা শিখবে। এভাবেই সমাজ বদলায়।
প্রথম সপ্তাহ: সাথে পানির বোতল ও শপিং ব্যাগ রাখা শুরু করুন। দ্বিতীয় সপ্তাহ: প্লাস্টিকের ব্রাশ ও বোতল পরিবর্তন করুন। তৃতীয় সপ্তাহ: রান্নাঘরের বর্জ্য দিয়ে কম্পোস্ট করা শুরু করুন। চতুর্থ সপ্তাহ: বিদ্যুৎ ও পানি সাশ্রয়ে কঠোর হোন।
প্রশ্ন: বাংলাদেশে কি ইকো-ফ্রেন্ডলি পণ্য সহজে পাওয়া যায়? উত্তর: হ্যাঁ, বর্তমানে অনেক অনলাইন এবং অফলাইন শপে পাটের পণ্য, বাঁশের তৈরি জিনিস এবং অর্গানিক খাবার পাওয়া যাচ্ছে।
প্রশ্ন: কম্পোস্ট সার তৈরি করতে কি দুর্গন্ধ হয়? উত্তর: সঠিক নিয়মে বাতাস চলাচল নিশ্চিত করে কম্পোস্ট করলে দুর্গন্ধ হয় না। শুকনো পাতা বা কাগজের টুকরো মিশিয়ে দিলে গন্ধ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
Leave a Reply
Your email address will not be published. Required fields are marked *




.webp)
 (1080 x 1080 px).webp)
.webp)
.webp)
.webp)